যদি কোন বৃহৎ আকারের শক্তিধর, সুতীক্ষ্র শিকারি পাখির কথা বলা যায় তাহলে Eagle-এর নাম সবার আগে আসে। এটি Accipitridae পরিবারের একটি শিকারি সদস্য।
ঈগল তার জীবন দশার সারাটা সময় জঙ্গলে কাটাতেই পছন্দ করে। এর বেশ কয়েকটি প্রজাতি আছে। এদের বিভিন্ন বর্গে ও গণে ভাগ করা হয় এর প্রজাতির উপর ভিত্তি করে।
প্রাপ্তবয়স্ক একটি ঈগল প্রায় ৩০-৩৫ ইঞ্চি লম্বায় এবং প্রায় ৩০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। সবথেকে আশ্চার্যের বিষয় হলো প্রায় ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে প্রাপ্তবয়স্ক ঈগল।
এ পাখির খাদ্য তালিকায় আছে সাধারণত বানর, ছোট জাতের পাখি, টিকটিকি, সাপ এবং অন্যান্য ছোট ও মাঝারি আকারের পশু-পাখি। ঈগলের বড় অস্ত্র হলো তার নখ। এগুলো এতই তীক্ষ্ণ ধারালো যে,মূহুর্তে যেকোন শিকারকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারে। নখ ব্যবহার করে প্রথমে শিকার করে এবং পরে শিকারকৃত প্রাণীকে অনেক উপরে নিয়ে, ফেলে দেয়। ফলে মারা যায় প্রাণীটি।
ঈগল বাসস্থান নির্মাণের জন্য ১০০ ফুট উপরের স্থান নির্বাচন করে। যেখানে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে বসবাস করে এবং প্রজনন ঘটায়।
ঈগল প্রায় ৭০ বছর বাঁচে, যা অন্যান্য অনেক পশু-পাখির তুলনায় বেশি। তবে সাধারণ পাখির তুলনায় ঈগলের জীবনধারা অনেক ব্যতিক্রম। এরা তুলনামুলক কম শীত পছন্দ করে।
ঈগলকে সংগ্রামী পাখিও বলা যেতে পারে। এ পাখির গড় আয়ু ৭০ বছর হলেও জীবনের চল্লিশটা বছর সংগ্রাম করেই কেটে দেয়। আর চল্লিশের পরের জীবনটা আরও করুণ।
কেন করুণ?
স্বাভাবিকভাবে ৪০ বছর পর্যন্ত এরা শিকার করতে পারে। এরপর এদের পালক গুলো বেশ ভারী ও ঠোঁটের সুচালো অংশটুকু বেশ বড় হয়। ফলে শিকার করতে বেশ সমস্যা হয়।
এসময় ঈগল তার জীবন যুদ্ধের চুড়ান্ত পর্যায়ে চলে আসে। পাখিটি তখন একটি উঁচু স্থানে যায় এবং পাথরের সাহায্যে নিজের ঠোঁট ভেঙ্গে ফেলে। পুরনো পালকগুলোও ফেলে দেয়। এসময় অন্যরকম যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়।
যেহেতু ঠোঁট ও পালকের সাহায্যে শিকার করতো সেহেতু এগুলোর অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে তাকে তিন চার মাস না খেয়েই থাকতে হয়।
এমন কঠিন সিদ্ধান্তের কারণে অনেক ঈগল মারাও যায়।
আর যেসব ঈগল এই তীব্র যন্ত্রনা সহ্য করে টিকে থাকে তারাই পরবর্তিতে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন লাভ করে। অর্থাৎ শিকার করার জন্য ঈগলের নতুন পালক জন্ম নেয় আর ঠোঁট ফিরে পায় তার হারানো তীক্ষ্ণতা। পরবর্তী জীবনে আবারও সেই আকাশের সিংহের ন্যায় সে তার জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যায়।