শীতকালীন সবজিগুলোর মাঝে টমেটোর বেশ সুনাম রয়েছে। যদিও এ সবজি বার মাসেই চাষ হয়। তবে বিভিন্ন মৌসুমে টমেটোর স্বাদ ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে টমেটো কাঁচা বা পাকা দুই অবস্থাতেই স্বাদে অতুলনীয়। সালাদে এ সবজির ব্যবহার বেশি হলেও খাবারের মান উন্নত করতে এর রয়েছে ব্যাপক ব্যবহার। এছাড়াও কেচাপ, সস এর মতো নানা মুখরোচক খাবারও তৈরি টমেটো থেকে।
টমেটোতে রয়েছে এ কে, বি১, বি৩, বি৫, বি৬, বি৭ ও সি’সহ নানা প্রাকৃতিক ভিটামিন এবং ফোলেট, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্রোমিয়াম, কোলিন, কপার এবং ফসফরাসের মতো খনিজও ।
টমেটোর মাঝে থাকা এই নানা উপাদান আমাদের শরীরে কীভাবে কাজ করে জেনে নেই-
রোগ প্রতিরোধে
টমেটোতে এতো পরিমাণ পুষ্টি আর ভিটামিন রয়েছে যা একজন মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণ বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত টমেটো খেলে শরীরের শক্তি বাড়ে ফলে শরীর সুস্থ থাকে।
স্ট্রেস কমাতে
আমরা তো জানি, বর্তমান সময়ের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো জটিল রোগের মূল কারণ হলো এই স্ট্রেস। কিন্তু এটা কি জানেন? টমেটো মানবশরীরের স্ট্রেস হরমোন কমাতে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
রক্তশূন্যতা দূরীকরণে
প্রতিদিন যদি দু-একটি করে টমেটো খান, তাহলে রক্তের কণিকাগুলো বৃদ্ধি পাবে। ফলে রক্তস্বল্পতা দূর হবে। পাশাপাশি রক্ত পরিষ্কার, হজম ভালো হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
ত্বকের যত্নে
টমেটোর মাঝে লাইকোপিন নামে একটি উপাদান আছে যা ত্বকের ক্লিনজারে কাজ করে। ফলে ত্বক পরিষ্কার ও সতেজ করে এবং সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। টমেটোর রস প্রতিদিন মুখে লাগালে ত্বক মসৃণ ও কোমল করে আর বলিরেখা রোধে কাজ করে। যাদের চর্মরোগ আছে, তারা যদি প্রক্রিয়াজাত করে টমেটো ব্যবহার করেন, তাহলে কার্যকরী ফল পাবেন। টমেটো আমাদের ত্বককে সুস্থ রাখার পাশাপাশি চোখকেও সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
সর্দি-কাশি প্রতিরোধে
সর্দি-কাশি রোধে যদি দুই একটি টমেটো দিয়ে সুপ তৈরি করে খাওয়া যায় তাহলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া হালকা জ্বরেও টমেটো খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস রোধে
টমেটোতে থাকা ক্রোমিয়াম রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে বিধায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ কার্যকরী।
রক্তচাপ কমাতে
টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম। যা কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে রক্তচাপ কমাতে বেশ সহায়ক।
অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে
টমেটোতে থাকা লাইকোপেন এবং ভিটামিন এ অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ উপকারী ভূমিকা রাখে।
অরুচি রোধে
যাদের মুখে রুচি কম এবং খিধে ভাবটা কম তারা কিন্তু টুকরো টুকরো করে টমেটো কেটে তার ওপর শুকনো আদার গুড়া ছিটিয়ে সামান্য লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে বেশ উপকার পাবেন।
হাড় মজবুত করতে
মানব শরীরে হাড় গঠনে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা অনেক। এই ক্যালসিয়াম আমরা টমেটোতে পেতে পারি। যা আমাদের দুর্বল হাড়গুলোকে মজবুত করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও নিয়মিত টমেটো খেলে অর্শ, জন্ডিস, পুরোনো জ্বর নিরাময়ে বেশ উপকার আসে।
এগুলো ছাড়াও গর্ভবতী মা ও যাদের বাচ্চা হয়েছে তাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি বাড়তে নিয়মিত টমেটো খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।
টমেটোর এত গুন থাকলেও কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে:
এসিডিটি তৈরি করে
টমেটোতে থাকা ম্যালিক ও সাইট্রিক অ্যাসিড পাকস্থলীতে হজমে বাধা দেওয়ায় অ্যাসিড তৈরি করে। তবে রান্নার সময় টমেটোর খোসা ও বিচি ফেলে দিলে কিছুটা এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।
অ্যালার্জি প্রবণতা বৃদ্ধি পায়
টমেটোতে থাকা হিস্টামিন ত্বকে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। ফলে মুখ ফুলে যাওয়া হাঁচি গলা জ্বালা ভাব দেখা দিতে পারে।
কিডনিতে পাথর
টমেটো খেলেই কিন্তু কিডনিতে পাথর হবে না। তবে যাদের কিডনিতে পাথর আছে তাদেরই টমেটো খেলে সমস্যা বাড়তে পারে।
টমেটোতে থাকা অক্সলেট উপাদানটি মানুষের কিডনিতে অক্সালেট পাথর তৈরিতে সাহায্য করে।
এছাড়াও যারা পেটের সমস্যায় ভোগেন তারা যদি অতিরিক্ত টমেটো খান,তবে সমস্যা বাড়তে পারে। তাছাড়া টমেটোতে থাকা যৌগ কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
This entrance is unbelievable. The splendid substance displays the creator’s dedication. I’m overwhelmed and anticipate more such astonishing entries.
আলহামদুলিল্লাহ্