দেশি মুরগী, এমন কেউ নেই যার পছন্দ না। আর তা যদি হয় ওল দিয়ে, তাহলে তো কথাই নেই। ওলের নাম শুনে কি আপনার গলা ধরতে শুরু করেছে। চিন্তা নেই, আগেকার সেই বুনো ওল কিন্তু এখন আর পাওয়া যায় না। এখনকার হাইব্রিড ওল গুলোতে গলা ধরে না বা চুলকায় না।
স্বাদে অতুলনীয় এই রান্না একটু আলাদা তবে খুবই সহজ। যে কখনও রান্নাই করেনি, সেও অনায়াসে করতে পারবে। আর নানি- দাদীদের রান্না মানেই তো অল্প মশলায় সুস্বাদু রান্না। অতিরিক্ত তেল মশলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া ডায়াবেটিকস রোগীরা এই খাবার নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন।
তাহলে জেনে নেয়া যাক, এই রান্নায় কি কি উপকরণ লাগছে-
উপকরণ:
- ১. মুরগী – ১টি
- ২. ওল কিউব করে কাটা- ১ কাপ
- ৩. পেঁয়াজ কুচি- ১ কাপ
- ৪. তেল- ১/২ কাপ
- ৫. আদা বাটা- ১ চা চামচ
- ৬. রসুন বাটা- ১ চা চামচ
- ৭. শুকনো মরিচ ভিজানো বাটা- ২ চা চামচ
- ৭. গোটা রসুন- ৩/৪টি
- ৮. লবণ- স্বাদমতো
- ৯. হলুদ- ১ চা চামচ
- ১০. জিরা বাটা- ১ চা চামচ
- ১১, তেজপাতা- ২ টি
- ১২. সাদা এলাচ- ৩টি
- ১৩. কালো এলাচ- বড় সাইজের ১টি
- ১৪. দারুচিনি- ২ টুকরো
- ১৫. লবঙ্গ- ২/৩ টা
- ১৬. গোটা জিরা- ১/২ চা চামচ
- ১৭. ভাজা জিরা গুড়া- ১/২ চা চামচ
রন্ধন প্রণালি:
অনেকের ওল মুখে ধরে, এজন্য কেটে রাখা ওলগুলো প্রথমে সিদ্ধ করে পানি ঝরায় নিবো। তারপর মুরগী কেটে পরিষ্কার করে পানি ঝরায় তার উপর ১/২ কাপ পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, জিরা বাটা, মরিচ বাটা(পছন্দ মত বাড়ায় বা কমায় নিতে পারবেন), গোটা রসুন, লবণ, হলুদ, তেজপাতা, দারুচিনি, লবঙ্গ এবং ১ টেবিল চামচের মত তেল দিয়ে হাত দিয়ে সুন্দরভাবে মাখাতে হবে। যেন মশলা মাংসের মাঝে ঢুকে যায়। তারপর পরিমাণ মত পানি দিয়ে চুলায় মাঝারি আঁচে মোটামুটি সিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রান্না করবো।
এবার একটা কড়াইয়ে ২ টেবিল চামচের মত তেল দিয়ে ১/২ কাপ পেঁয়াজ কুচি বেরেস্তা করে উঠায় রাখবো। একই তেলে সিদ্ধ করে রাখা ওলগুলো হালকা লাল করে ভেজে নিবো।
ঐ তেলেই গোটা জিরা দিয়ে একটু ভেজে নিয়ে রান্না করা মাংস এবং ভেজে রাখা ওল দিয়ে কষাতে হবে। এভাবে ৪/৫ মিনিট কসানোর পর পানি দিয়ে(যে যেমন ঝোল রাখবেন সেটা ভেবে পানি দিবেন) আবারও ৩/৪ মিনিট রান্না করে ভাজা জিরা গুড়া ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে নামায় পরিবেশন করুন।
পুষ্টিগুণ
ওল সারাবছর বাজারে পাওয়া গেলেও এটি কিন্তু শীতকালীন সবজি। এ সবজি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে ফাইবার, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ই, এ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মতো স্বাস্থ্যকর উপাদান।
এ সবজি শরীরের প্রদাহজনিত নানা সমস্যায় সহায়তা করার পাশাপাশি ডায়াবিটিস, হৃদ্রোগ, স্থূলতার মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণেও বেশ কার্যকরী।
এছাড়াও মলাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। হজমশক্তি বাড়াতে আর গ্যাসের সমস্যা কমাতেও ওলের জুড়ি মেলা ভার।