লেবু আমাদের দেশের খুবই পরিচিত ও সারা বছর পাওয়া যায় এমনি একটি ফল। আর আমলকির পর যদি কোন ফলে ভিটামিন সি খুব বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়, তা হলো লেবু। লেবু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী হয়তো অনেকেরই অজানা। চলুন তাহলে যেনে নেই এর গুণাগুণ সম্পর্কে-
লেবুর স্বাস্থ্য উপকারিতা (Benefits of lemon)
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
মানুষের শরীরে যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তখনই বিভিন্ন ভাইরাল জ্বর ও সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যা আমরা লেবুতে প্রচুর পরিমাণে পেয়ে থাকি। তাই আমাদের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে প্রতিদিন লেবু খাওয়া উচিত।
২. ত্বকের যত্নে
মুখে বিভিন্ন ধরনের দাগ, ফুসকরি, ব্রুণ দেখা দেয়, যখন আমাদের শরীরের রক্তে খারাপ ও বিষাক্ত রাসায়ানিক পদার্থগুলো জমা থাকে। এই দূষণীয় রক্ত পরিষ্কার রাখে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট নামক উপাদনাটি। যা লেবুতে রয়েছে। যদি নিয়মিত লেবু খাওয়া যায় তাহলে রক্ত থেকে এসব বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে রক্ত পরিষ্কার থাকে। ফলে ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়।
তাছাড়া ত্বক থেকে কালো বলিরেখা গুলো ধীরে ধীরে চলে যাবে ও ত্বকের শুষ্কতা কমায় ত্বককে কোমল ও মসৃণ করে। শুধু তাই নয়, যদি লেবুর খোসায় একটু মধু দিয়ে ভালো করে পুরো মুখ ঘষা যায়, তাহলে মুখের দাগ দূর হয়। শুধু মুখে ও নয়, আপনি চাইলে হাত ও পায়েও ঘষতে পারেন। আর নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক দাগ মুক্ত ও উজ্জ্বল হবে।
৩. কিডনি সুস্থ রাখতে
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে। এই সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর তৈরি হতে বাধা দেয়। ফলে কিডনি সুস্থ থাকে। তাছাড়া ভুল করে যদিও পাথর তৈরি হয়, সেটা ভেঙে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে ।
তাই প্রতিদিন সকালে নিয়মিত লেবু জল খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
৪. পানিশূণ্যতা রোধে সহায়ক
শরীরকে সুস্থ রাখতে আর শুষ্ক হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে গেলে, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। আমরা জানি কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই ঘাটতিটা অপূর্ণই থেকে যায়। তাছাড়া শুধু পানি খেতে সবসময় ভালোও লাগেনা। সেক্ষেত্রে যদি লেবু সহ পানি করা যায়, তাহলে লেবুর উপকারের পাশাপাশি পানির ঘাটতিও পূরণ হবে। আর অতিরিক্ত পানিও পান করা হবে।
৫. রক্তাল্পতা দূরীকরণে
আমরা জানি, লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। তবে এতে সামান্য পরিমাণে আয়রনও আছে।আমরা যখন অন্যান্য খাবার খাই, তখন লেবুতে থাকা ভিটামিন সি সেই সব খাবার থেকে আয়রন শোষণ করে। আর এই দুই আয়রন একত্রে হয়ে রক্তের লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে । ফলে শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দেয় না ।
৬. শরীরে বিভিন্ন কোষ সুস্থ রাখতে
লেবুতে শুধু ভিটামিন সি নয়, এতে ফ্লেভানয়েড (Flavonoid) নামে এক ধরনের এন্টি অক্সিডেন্টও রয়েছে। এটি শরীরে উৎপন্ন হাওয়া ফ্রি রেডিক্যালগুলোকে বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে।ফলে শরীরের কোষ গুলো নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। যে কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
৭. ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
শরীরে যখন ইউরিক অ্যাসিডেব় মাত্রা বেড়ে যায় তখন শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা অনুভব হয়। এক্ষেত্রে কার্যকরী উপায় হলো লেবু। কেননা, লেবু শরীরের মধ্যে ক্ষারের (alkaline ) মতো আচরণ করে এবং জয়েন্ট গুলো থেকে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে জয়েন্টের ব্যথা কমায়।
৮. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে
লেবুতে আর একটি উপাদান রয়েছে তাহলে জলে দ্রবণীয় পেকটিন তন্তু ।
এ কারণে লেবু জল পান করলে পেট ভরা অনুভূত হয় আর অল্প খেলেই পেট ভরে যায়। তাছাড়া ক্ষুধাও কমে যায়। যে কারণে আপনার ওজন কমাতে এটি খুবই কার্যকারী।
তাছাড়া খালি পেটে কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। কেননা, এতে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ধ্বংস হয়।
৯. হার্ট ও ব্রেন সুস্থ রাখে
লেবুতে থাকা পটাসিয়াম খনিজ আমাদের হার্ট ও ব্রেন কে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়া হার্ট ও ব্রেনের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে দিয়ে সঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে ।
১০. হজমশক্তি বাড়াতে ও লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে
লেবুর মধ্যে থাকা পেকটিন তন্তু বা ফাইবার আমাদের হজমশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। আর লিভারে থাকা এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে তোলে। যার ফলে পরিপাকে সহায়তা হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভবনা কমে যায়। তাছাড়া ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতেও কাজ করে। এগুলো ছাড়াও লেবু রক্তে অক্সিজেন পরিবহনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
১১. স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে
দাঁতের মারি সুস্থ রাখতে ভিটামিন সি এর বিকল্প হয় না। আর লেবু তো ভিটামিন সি- তে পরিপূর্ণ। তাই দাঁতের মারি সুস্থ রাখতে আর ইনফেকশন দূর করতে নিয়মিত লেবু জল পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। এর ফলে স্কার্ভি রোগে সম্ভাবনাও কমে যায় ।
১২. রক্তচাপ এবং স্ট্রেস কমায়
লেবু পানি বা লেবুর শরবত পানে শরীরে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি কাজ করে। ফলে এটা দুশ্চিন্তা ও হতাশা থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। লেবু শরীরের সজীবতার পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে লেবুতে থাকা ভিটামিন সি সাহায্য করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটা কমাতে কাজ করে।
১৩. মুখের দুর্গন্ধ দূরীকরণে
মুখে বিভিন্ন কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে। অনেক সময় পেঁয়াজ বা রসুন জাতীয় কোন গন্ধযুক্ত খাবার খেলে দীর্ঘ সময় যাবৎ মুখে গন্ধ থেকে যায়। এ সময় যদি যদি এক টুকরো লেবু বা লেবু জল পান করা যায় তাহলে ওই অস্বস্তিকর মুখের গন্ধ চলে যাবার পাশাপাশি মুখে একটা সুন্দর গন্ধ বের হবে আর সতেজ অনুভব হবে ।
১৪. খনিজ লবণের ঘাটতি পূরণে
গরমের সময় আমাদের শরীরে অনেক ঘাম হয়। সেটা দৌড়ানোর সময় বা অনেকক্ষণ ধরে ব্যায়াম করার ফলেও হওত পারে। তবে এ ঘামের সাথে যথেষ্ট পরিমাণে খনিজ লবণ বেরিয়ে যায় শরীর থেকে। এই ঘাটতি পূরণে শুধু জল নয়, লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন, দেখবেন খনিজ লবণের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে অনেকটা।
কেননা, লেবুতে পটাসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম, আয়রনের মতো বিভিন্ন খনিজ লবণ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়।
অনেক সময় আমাদের মুখে রুচি থাকেনা বা খাবার স্বাদ লাগেনা। তাই খাবারে যদি লেবুর রস নেয়া যায় তাহলে তা খেতে সুস্বাদু হয়। কেননা, এর বিশেষ স্বাদ ও গন্ধ যে কোনো খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে মুখে রুচি নিয়ে আসে।
এতক্ষণ আমরা লেবুর স্বাস্থ্য উপকারিতা জানলাম। কিন্তু কি জানেন? শুধু লেবু নয়, এর খোসাও কতটা উপকারী? তাহলে লেবুর খোসার কিছু উপকারিতা জেনে নেয়া যাক-
১৫. দাঁত ঝকঝকে রাখতে
বিভিন্ন কারণে বা অযত্নে বা অসচেতনতায় অনেক সময় আমাদের দাঁত হলুদ বর্ণ ধারণ করে। এতে কিন্তু আমাদের টেনশনের শেষ থাকেনা। কীভাবে দাঁত ঝকঝকে হবে এটাই মাথায় ঘোরে। এর সহজ কার্যকরী উপায় হলো এক টুকরো লেবুর খোসা নিয়ে ২ মিনিট দাঁত ঘষুন খোসার ভেতরের অংশ দিয়ে। তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন আর ফলাফল দেখুন।
১৬. কাটা আপেল তাজা রাখতে
ফল যদি কেটে রাখা হয়, তাহলে কিছুক্ষণ পরে দেখা যায় কাটা অংশ বাদামি রং হয়ে গেছে। এই বাদামি রং থেকে রক্ষা করতে লেবু বেশ কার্যকারী। কেননা, কাটা অংশটিতে লেবু মাখিয়ে রাখলে আর বাদামি রং হবেনা আর ফল থাকবে সতেজ।
১৭. সিঙ্ক ও বাথটাব পরিষ্কার রাখতে
সিঙ্ক বেশিদিন ব্যবহার হলে, বিভিন্ন দাগ বসে যায়। যা পরিষ্কার করা বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে যদি বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিয়ে একটি লেবুর খোসা দিয়ে ভাল করে ঘষা যায়, তাহলে তা নতুনের মত ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
১৮. মশার উপদ্রব কমাতে
গরম আসলে যেন মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। কিন্তু আপনারা কি জানেন, মশার উপদ্রব কমাতে লেবু বেশ কার্যকরী। শুনতে হয়ত অনেকটা আজব লাগছে, তাই না? আজব লাগলেও সত্য। যদি একটি লেবুকে দুইভাগ করে নিয়ে, কাটা অংশে লবঙ্গ গেঁথে দেয়া হয়, তাহলে দেখবেন মশার উপদ্রব অনেক কমে গেছে।
১৯. পিঁপড়ার ও পোকামাকড়ের উৎপাত কমাতে
কম বেশি সব মৌসুমে পিঁপড়ার উৎপাত থাকলেও বর্ষাকালে যেন এর উৎপাত বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে কয়েক লেবুর খোসা খুব উপকারে আসে। যেদিক দিয়ে পিঁপড়া যাতায়াত করে সেদিকে যদি এক টুকরা লেবুর খোসা রাখা যায়, তাহলে পিঁপড়ার আনাগোনা কমে যাবে। কেননা, লেবুর গন্ধ পিঁপড়া এবং অন্যান্য পোকামাকড় সহ্য করতে পারে না।
২০. ঘর ও ফ্রিজ সতেজ রাখতে
ঘরের পরিবেশকে সতেজ রাখার পাশাপাশি ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করতে লেবু আর লেবুর খোসার তুলনাই হয় না। লেবু রসের সাথে যদি রোজমেরি এবং ভ্যানিলার মেশিয়ে সহজেই ফ্রিজের দাগ পরিষ্কার করা যায়। আর দুর্গন্ধ দূর করতে একটি বা দুটি লেবুর খোসা ফ্রিজে রেখে দিন, দেখবেন ভেতরে দুর্গন্ধ দূর হয়ে গেছে।
২১. সিরামিকের জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে
লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড থালাবাসন চকচকে করতে সাহায্য করে। ডিশ ওয়াশারের সাথে লেবুর খোসা দিয়ে থালাবাসন ঘষুন, দেখবেন সব দাগ উঠে কেমন ঝকঝকে নতুনের মত পরিষ্কার হয়েছে। শুধু সিরামিক নয়, এভাবে কাঁচের গ্লাস ও প্লেটও পরিষ্কার করতে পারেন।
২২. ঘামের দাগ দূর করতে
গরম মানেই ঘাম হওয়া। আর এই ঘাম অনেক সময় জামা কাপড়ে দাগ হয়ে যায়। এই দাগ তুলতে লেবু বেশ কার্যকারী। একটি অর্ধেক রস বের করা লেবু দিয়ে ঘামের জায়গাটি ঘষে তার উপর বেকিং সোডা ছিটিয়ে সারা রাত রাখা যায় আর সকালে ডিটারজেন্ট পরিষ্কার করা যায়, তাহলে ঘামের দাগ আর থাকবে না।
আমরা শুধু লেবুর বিভিন্ন ধরনের উপকারিতাগুলোই জানলাম। কিন্তু একটা কথা আমরা সবাই জানি, কোন জিনিস সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হলে বা অতিরিক্ত ব্যবহার হলে তার পার্শ্ব- প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে। আমরা এখন লেবুর পার্শ্ব- প্রতিক্রিয়াগুলো জানবো-
পার্শ্ব- প্রতিক্রিয়া (Side-effects)
১. দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
অতিরিক্ত লেবু খেলে বা সরাসরি খেলে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। কেননা, লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড দাঁতের ওপর পড়ে সাদা স্তর তৈরি করে। যা দাঁতের ক্ষতি করে। সফট ড্রিংক আর অতিরিক্ত লেবু দুটোতেই ঠিক একই সমস্যা হয়। যদি প্রতিদিন সকালে উঠে লেবু পানি খান, তাহলে দিনে দুবার অন্তত ব্রাশ করেন তাহলে দাঁতের সমস্যা কম হতে পারে।
২. ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়
দীর্ঘদিন ধরে যারা লেবু খান, তাদের মুখের মধ্যে ফোঁড়া বা ফুসকুড়ি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এটা মুখের নরম কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ঘটে। সাইট্রিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ অন্য ফল খেলেই এই সমস্যা হতে পারে।
৩. অ্যাসিড এবং বমির আশঙ্কা হতে পারে
যত উপকারিই হোক না কেন, অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না। তাই ভিটামিন সি শরীরের জন্য ভাল হলেও কিন্তু অতিরিক্ত ভালো নয়। খাবার হজম করতে লেবুতে থাকা অ্যাসিড ভাল কাজ করে। তাই হজমে সমস্যা হলে অনেকেই লেবু জল পান করে থাকেন। পেটের সমস্যা কিন্তু অতিরিক্ত অ্যাসিডের কারণেও দেখা দিতে পারে, এটা হয়ত অনেকেরই অজানা।
কেননা, অতিরিক্ত লেবু খেলে তা থেকে অ্যাসিড হবেই। আর অ্যাসিডি হরে তো বমি বমি ভাব বা বমি হতেই পারে।
তাই লেবু জল না খেয়ে খাবারের সাথে মিশিয়ে খান, উপকার পাবেন।
৪. মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে
লেবু থাকা সাইট্রাস কোন ব্যক্তির যদি মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তা বাড়িয়ে দিতে পারে। সাইট্রাস সম্পৃক্ত ফলগুলির মাঝে টাইরা মাইন নামক উপাদানের জন্যই এমনটা হয়।
৫. রক্তে আয়রনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে
লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। রক্তে আয়রনকে সংরক্ষণ করতে কিন্তু ভিটামিন সি সাহায্য করে। তাই শরীরে ভিটামিন সি-র পরিমাণ যদি বেড়ে যায়, তাহলে রক্তে অধিক পরিমাণ আয়রন সংরক্ষণ হবে। যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
৬. উৎসেচক ভেঙে যায়
পেপসিন নামক উপাদানটি আমাদের হজমে সাহায্য করে। কিন্তু খালি পেটে বা অতিরিক্ত লেবু খেলে প্রয়োজনীয় উৎসেচক পেপসিন ভেঙে যেতে পারে।মূলত পেপসিনকে ভেঙে ক্ষতিকর এনজাইম তৈরি করে লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড। যার ফলে হজমে ব্যাঘাত হয় আর পেপটিক আলসারের আশঙ্কা থাকে।
৭.সানবার্নের আশঙ্কা থাকে
লেবুতে অ্যালার্জি। শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার কারণ নেই। এটা অনেকেই তা বুঝতে বা ধরতে পারেন না। লেবু খেয়ে যখন রোদে বের হয় তখন স্কিনে লাল র্যাশ দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে তো কালো কালো ছোপও দেখা দেয়। সানবার্ন বলে ভুল করি আমরা যেটাকে। অবশ্য সাইট্রিক অ্যাসিডের সাথে সূর্যালোকের বিক্রিয়ায় এই সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া অতিরিক্ত লেবুর রস কিন্তু স্কিন ক্যানসার ডেকে আনতে পারে।
৮.খনিজ লবণের ঘাটতি হতে পারে
অতিরিক্ত লেবু জল কিন্তু ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণ হতে পারে। আর যদি ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, তখন প্রস্রাবের সাথে কিছু পরিমাণ খনিজ লবণ শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়। তাই শরীরে খনিজ লবণের ঘাটতি হতে পারে।
তাই সবসময় খেয়াল রাখবেন, পরিমিত পরিমাণে লেবু জল পান করবেন আর এর উপকারিতা গ্রহণ করবেন।