এই পৃথিবী হলো বৈচিত্রময় আর তার নিয়ম-কানুনেও রয়েছে অনেক বৈচিত্র, রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
এবার এসব নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্পর্কে জানবো-
সিঙ্গাপুরে যে বিষয়গুলোতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে
আমাদের দেশে মানুষ শখ করেই কবুতরকে খাওয়ায়। আর এদেশে যদি কেউ কবুতরকে খাওয়ায় তাহলে শাস্তি পেতে হবে। তাও আবার ৫০০ ডলার জরিমানা। গান গাইলেও পেতে হয় শাস্তি।জরিমানা অথবা ৩ মাসের কারাদণ্ড! যদি কেউ পাবলিক টয়লেটে যান আর ফ্লাশ করতে ভুলে যান তাহলেও কিন্তু জরিমানা গুনতে হবে ১৫০ ডলার।
জনসম্মুখে কেউ ধূমপান করলে তাকে গুণেগুণে ১৫২ থেকে ৭৬০ ডলার জরিমানা গুনতে হবে। একজনের ওয়াইফাই যদি অন্যজন না বলেই সংযোগ দেয় তাহলে পেতে হবে শাস্তি।আর তা ৩ বছর।
এদেশের মানুষ কোন অবস্থাতেই নগ্ন হতে পারবে না। হোক না সেটা নিজ বাড়ির নিজ রুমে।বড় আকারের জরিমানা বা কারাদন্ড ভোগ করতে হবে পর্নোগ্রাফি চার্জের জন্য।
চুইংগাম বিক্রির শাস্তি ২ বছরের কারাদণ্ড। খাওয়াতে নেই কোন জরিমানা,নেই কোন শাস্তি তবে বিক্রি করলেই ভোগ করতে হবে ২ বছরের জেল বা ১ লাখ ডলার জরিমানা।
ইরানে যেসব বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে
র্যাপ মিউজিক, পোষ্য হিসাবে কুকুর-বেড়াল, স্কিনটাইট জিন্স, ট্যাটু। এছাড়াও হলিউড স্টারের মতো হেয়ারকাট এবং পুরুষদের স্পাইক, পনিটেলের মতো ওয়েস্টার্ন হেয়ারকাট দেয়াও নিষিদ্ধ এদেশে। এসব কাজকে ঐদেশের ইউনিয়ন শয়তানকে পুজো করার লক্ষণ মনে করে থাকে।
চীনে যেসব বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে
২০০৯ সাল থেকে চীনে ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধকরা হয়। চীনে হোয়াটসঅ্যাপ নামে মেটার মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম এবং ইনস্টাগ্রাম যা ফটো এবং ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ নামে পরিচিত তাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আলজিরিয়ায় যা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে
আলজিরিয়া একটি ইসলামী রাষ্ট্র, যার সরকারি ধর্ম সুন্নি ইসলাম। এটি উত্তর আফ্রিকার একটি দেশ। এখানে খ্রিস্টধর্ম নিষিদ্ধ এবং তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেল রাখা পুরোপুরি বেআইনি। তাছাড়াও ভালোবাসা দিবস উদযাপন নিষিদ্ধ করেছে দেশটি। এর পেছনে ধর্মীয় কারণ ছাড়াও আরও কারণ আছে।
ভালোবাসা দিবস উদযাপনে আলজিরিয়া ছাড়াও আরও যেসব দেশ নিষিদ্ধ করেছে-সৌদি আরব, উজবেকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান। তবে পরবর্তীতে এসব দেশে আইন কিছুটা শিথীল করা হয়।
গ্রিসে যে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে
ভিডিও গেম কম বেশি অনেকের পছন্দ। কিন্তু গ্রিসে যদি ভিডিও গেম খেলেন তাহলে সমস্যায় পড়তে হবে কারণ এদেশটিতে ভিডিও গেম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০০২ সালে গ্রিস সরকার বেআইনি জুয়া খেলা বন্ধ করতে এ আইন করা হয়।
মালয়েশিয়ায় যে বিষয়ে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা-
মালয়েশিয়ায় হলুদ রঙের সব ধরণের (জুতো-জামা, টুপি, এমনকি হলুদ রঙের অন্তর্বাস) পোশাকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কেননা মালয়েশিয়ায় প্রতিবাদের প্রতীক মনে করা হয় হলুদ রঙকে। রাজনৈতিক একটি বিরোধী দলের পরনে হলুদ রঙের পোশাক লক্ষ্য করা যায়। আইনী পদক্ষেপ হিসাবে মালয়েশিয়া এটি গ্রহণ করে।
বুরুন্ডিতে যে বিষয়ে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা-
স্বাথ্যের কথা ভেবে অনেকেই সকালে উঠে জগিং করার পরামর্শ দেন। যদি বুরুন্ডিতে এ পরামর্শ মানতে চান তাহলে সারা জীবন জেলে কাটাতে হতে পারে। দেশটির প্রেসিডেন্ট পিয়ের এনকুরুনজিজা উপজাতিদের মধ্যে যুদ্ধ রুখতে এমনটা করেন।
ডেনমার্কে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে বিষয়ে-
প্রতিটা বাবা-মা চান, নিজের সন্তানের নাম পছন্দ মতো রাখতে! ডেনমার্কবাসীদের এজন্য অনেক দুর্ভোগ সামলাতে হয়। কেননা, সরকারের তৈরি ২৪ হাজারের একটি নামের তালিকা হতে বাছাই করতে হয় তাঁদের সন্তানের নাম। অবশ্য পছন্দের নামে ডাকার জন্য সরকারের কাছে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। তবে অনুমোদনের সুযোগ অনেক কম।
উত্তর কোরিয়ায় যে বিষয়ে বারণ রয়েছে-
উত্তর কোরিয়ার সরকারের জিন্স পরা নিয়ে কোন আপত্তি না থাকলেও নীল রঙের জিন্স পরা একেবারেই বারণ। কেননা,তাদের চিরশত্রু আমেরিকার পতাকায় নীল রঙের ছোঁয়া রয়েছে।
দক্ষিণ ভারতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে বিষয়ে-
তামিলনাড়ুর মন্দিরগুলিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মোবাইল ফোন ব্যবহারের। তামিলনাড়ু দক্ষিণ ভারতের একটি প্রদেশ। “মন্দিরগুলির শুদ্ধতা এবং পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য “২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারত সরকার মন্দিরে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল।
বাংলাদেশে যা নিষিদ্ধ-
শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকে ইসরায়েলে যাওয়া নিষিদ্ধ। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে বাংলাদেশ সরকার শক্ত অবস্থান নিয়ে ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরোধীতা করে আসছে। তাই ইসরায়েলে ভ্রমন বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ন নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ সরকার। দৃষ্টান্ত হিসাবে, বাংলাদেশের সাংবাদিক সালেহ চৌধুরিকে ৭ বছরের জেল দেয়া হয়েছিলো ২০০৩ সালে ইসরায়েলে ভ্রমনের চেষ্টার জন্য।
আরো দেখুন