fbpx
Tuesday, September 17, 2024
spot_imgspot_img
HomeLifestyleHealth & FitnessGreen Coconut: ডাব নিয়ে এতো মাতামাতি, কতটুকু জানেন এর সম্পর্কে?

Green Coconut: ডাব নিয়ে এতো মাতামাতি, কতটুকু জানেন এর সম্পর্কে?

গরম পড়লেই আমাদের মাথায় পরিচিত এক ফলের নাম চলে আসে। তা হলো ডাব (Green Coconut)। তীব্র গরমে ডাব যেন শরীর ঠান্ডা রাখার অন্যতম উপায়। তবে, গরম পরলেই ডাবের যেমন কদরবারে ঠিক তেমনি এই ফলকে নিয়েই বাজারে উত্তাপ হয়ে ওঠে। দিনে দিনে যেভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ডাবের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা বলাই বাহুল্য।

যাই হোক, গরমেই সাধারণত আমাদের দেশে ডাবের পানি বেশি খাওয়া হয়। সেজন্য আবার ভাববেন না, শীতের দিনে এটি উপকার করে না। শীত বা গরম, সবসময়ে ডাবের পানি শরীরের জন্য সমান উপকার করে। তবে মনে রাখা ভালো, কচি ডাবের পানি শরীরের জন্য উপকারী ।

পুষ্টিগুণ

কথায় আছে নারকেল বা ডাব গাছ জীবনদায়ী বৃক্ষ। ডাবের পানি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে আছে জলীয় অংশ, খনিজ পদার্থ, আমিষ, শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, চর্বি, ভিটামিন বি, ফসফরাস, ভিটামিন বি২, আয়রন, ভিটামিন সি ও খাদ্যশক্তি ২৩ কিলোক্যালরি।

ডাবের পানি যেহেতু একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পানীয়। সেহেতু এটা আমাদের কি কি উপকার করে থাকে তার বিস্তারিত জেনে নেই।

উপকারিতা (Benefits of Green Coconut)

১.পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে

ডাবের পানিতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। তাই শরীরে এসব উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে ডাবের পানি পানের পরামর্শ দেওয়া হয়।

২. ডায়রিয়া বা কলেরা নিরাময়ে

ডায়রিয়া বা কলেরা হলে রোগীদের ঘনঘন পাতলা পায়খানা ও বমি দেখা দেয়। এতে দেহ হতে প্রচুর পানি ও খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায়। যে কারণে ঘাটতি দেখা যায়। এক্ষেত্রে ডাবের পানি  অনেকটাই পূরণ করতে পারে। কেননা, ডাবের পানি গ্লুকোজ স্যালাইন হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে

যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা যদি নিয়মিত ডাবের পানি পান করেন তাহলে উপকার পেতে পারেন। 

৪. রক্ত তৈরিতে সহায়ক

ডাবের পানিতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে আয়রন। এই উপাদানটি আমাদের শরীরে রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে।

৫. দাঁতের সুস্থতায়

ডাবের পানিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস। দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে এসব খনিজ লবণ ভালো কাজ করে। তাছাড়া দাঁতের মাড়িকে মজবুত করতে সহায়তা করে। অনেকেই দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া এবং মাড়ি কালচে লাল হয়ে যাওয়া রোগে ভোগেন, তাদের এসব সমস্যায় খনিজ লবণ সহায়তা করে। 

৬. ত্বকের যত্নে

ত্বকের যত্নে ডাবের পানির তুলনা হয় না। মুখের বিভিন্ন ধরনের দাগ,যেমন- জলবসন্তের দাগ এবং ছোট ছোট আরও অনেক দাগের জন্য ডাবের পানি  বেশ কার্যকরী। সকাল বেলা যদি ডাবের পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা যায়, তাহলে দাগ মুছতে এবং মুখের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া ব্ল্যাক হেডস দূর করতে ও বলি রেখা কমাতেও সহায়তা করে।

৭. গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা

  • গর্ভাবস্থায় একজন নারীর তাঁর নিজের ও সন্তানের জন্য অনেক কিছু প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে ডাবের পানি কিছু কিছু বিষয়ে বেশ উপকারে দেবে।
  • শরীরে পানির ভারসাম্য ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • ডাবের পানিতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে গর্ভবতী নারীকে স্বস্তি দিতে পারে।
  • ভ্রূণের বৃদ্ধিতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম খুবই কার্যকর। যা ডাবের পানিতে পাওয়া যায়।

৮. শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষায়

পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতির কারণে শরীরে পানির ভারসাম্যের পাশাপাশি ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করতে পারে।

৯. আর্দ্রতা বজায় রাখতে

অতিরিক্ত রোদ আর গরমের কারণে শরীরে তরলের ঘাটতি হয় এবং শরীর আর্দ্রতা হারায়। শরীরের তরল উপাদান ও আর্দ্রতা বজায় রাখতে ডাবের পানি কাজ করে থাকে।

১০. হজমে সহায়তা করে

ডাবের পানিতে আঁশ থাকে বলে এটি আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করতে সহায়তা করে।

১১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

ডাবের পানিতে শর্করার পরিমাণ খুবই কম থাকে বলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে। তাছাড়া এতে কম ক্যালরি ও কম চিনি রয়েছে।

১২. ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে

ডাবের পানিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম। ফলে এটি আমাদের শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। তাছাড়া এটি শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে।

১৩. কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে

কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম কাজ করে থাকে। যা আমরা ডাবের পানিতে পেয়ে থাকি।

আরো দেখুন

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

কথায় আছে প্রতিটা জিনিসেরই  ভালো-মন্দ আছে, তাই ডাবও ব্যতিক্রম নয়। ডাবের পানিরও ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। সেটা হোক না যত উপকারী। সবকিছুরই নিয়ম থাকে, এর বাহিরে গেলেই  ক্ষতির হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তাহলে এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলো জেনে নেই-

১. ডায়রিয়ার আশঙ্কা

অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না। ডায়রিয়ায় ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ থাকলেও  অতিরিক্ত খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

২. রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে

ডাবের পানিতে থাকা পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম উপাদানগুলো উচ্চ রক্তচাপ, ইলেকট্রোলাইট, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তবে শরীরে এগুলোর কোনোটার পরিমাণ যদি বেড়ে যায়, তাহলে উচ্চ রক্তচাপ, ইলেকট্রোলাইট, ডায়াবেটিস ইত্যাদির ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এটি রক্তচাপ কমিয়েও দিতে পারে। যে কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে।

৩. কিডনি রোগীদের জন্য বিপজ্জনক

কিডনি সুস্থ রাখতে যদিও ডাবের পানি পান করার কথা বলা হয়। তবে কিডনি রোগীদের জন্য ডাবের পানি বিপজ্জনক হতে পারে। কেননা, কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে শরীরের অতিরিক্ত পটাশিয়াম দেহ থেকে বের হয় না। যার ফলে ডাবের পানিতে থাকা পটাশিয়াম আর দেহের পটাশিয়াম একত্রে হয়ে কিডনি ও হৃৎপিণ্ডের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভাল।

৪. অ্যালার্জি বাড়তে পারে

যাদের অ্যালার্জি আছে,  তারা যদি ডাবের পানি পান করেন তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া না খাওয়াই ভাল।

৫. ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়তে পারে

যাদের সর্দি বা ঠান্ডাজনিত রোগ আছে, তাদের বুঝেশুনে ডাবের পানি পান করা উচিত। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভাল।

ডাবের পানি উপকারী হলেও কিছু বিষয় মাথায় রাখা ভাল। যদিও খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই।

সতর্কতা

১. ডাবের পানি খাওয়ার জন্য সব সময় কচি ডাব বেছে নিবেন। কেননা, যত বয়স্ক ডাব হবে তত তার পানিতে বাড়তে থাকবে চিনির পরিমাণ। যেটা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

২. ডাব কাটা হয়ে গেলে তা রেখে না দিয়ে, সঙ্গে সঙ্গে পানি খেয়ে নিতে হবে। তা নাহলে এর পুষ্টিগুণ কমে যায়।

৩. খুব রোদ বা প্রচণ্ড গরম থেকে এসে সাথে সাথে ডাবের পানি না খেয়ে একটু জিরিয়ে নিয়ে খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

৪. চিনি, লবণ, গুড় এ জাতীয় উপাদান না মিশিয়ে শুধু ডাবের পানিই খাবেন। কেননা, এসব মেশালে এর পুষ্টিগুণ কমে যায়।

আমাদের দেশে ডাবের পানি খেতে হলে, ডাব কিনে তারপর কেটে খেতে হয়। কিন্তু অনেকের হয়ত অজানা রয়েছে, পৃথিবীর অনেক দেশেই ডাবের পানি বোতলজাত হিসাবে পাওয়া যায়। তবে এ পানি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা অজানা।

তাছাড়া প্রাকৃতিকভাবে কোন কিছু হতে উপকার পেতে হলে বেশ কিছুদিন ধরে নিয়ম করে খেতে বা ব্যবহার করতে হয়

আরো দেখুন
Lemon: এই গরমে লেবু কেন খাবেন?

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Elliana Murray on ONLINE SHOPPING
Discover phone number owner on Fake app চেনার উপায়